শক্র মুক্ত রাজ্যে নেতা ফিরে এলো
ঘরে ঘরে সাজ সাজ রব ওঠে তাই,
নেতা ফিরে এলো।
যুদ্ধের দিনে নেতা বন্দি ছিল শক্র রাজ্যে।
তবু নেতার নামেই যুদ্ধ।
ঘর ছাড়া, গ্রাম ছাড়া সবে।
শরণার্থী চলে সব একাকী, দলবেঁধে অনিশ্চিতের পথে।
রাজ্য হারা মানুষগুলো যুদ্ধ করে-
নয় মাস ধরে বনে, জঙ্গলে, মাঠে, নদীতে, পাহাড়ে,
যুদ্ধ চলে ঘরে এবং মনের গহীনে।
সাধারণ মানুষ, মুক্তি সেনা, শরণার্থী-
ওরা ফিরে আসে দলে দলে,
গ্রামে এবং শহরে।
আবার মুখরিত হয় মানুষের জীবন,
পাল্টে যায় পতাকা,
পাল্টে যায় মনের সব ইচ্ছা ও বাসনা।
তারপর একদিন নেতাকে হত্যা করে তারা মেতে উঠে উল্লাসে।
কারণ?
যুদ্ধ শেষে নেতার জন্য সবার মনে আবেগ-
কী দেবে নেতা, কী দেবে নেতা!
নেতা বলে, সব দেবো,
শুধু কিছুই দেবো না আগামী তিন বছর।
তারপর আসে বন্যা আর দুর্ভিক্ষ
শত শত, হাজার হাজার, লাখ লাখ মানুষ-
মরে জলে ডুবে,
মরে না খেয়ে।
নেতাকে বিদেশীরা তাদের জন্য ভীতিকর মনে করে,
ষড়যন্ত্রে নেতা হয় নিহত
উল্লাসে মাতে দেশী-বিদেশী শকুনেরা।
সেই দেশে নেতার মৃত্যুর বিচার হয় না।
হত্যাকারীরা খ্যাত হয় ‘সূর্য সন্তান’ হিসেবে।
বিভক্ত রাজ্যে চলে দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরব্যাপী হানাহানি-
শান্তির প্রত্যাশায় থাকে লক্ষ কোটি আদম সন্তান।
একদিন প্রত্যুষে এক যুবক সদৃশ মধ্যবয়সী হাজির সে দেশে,
‘যুদ্ধ শিশু’ সে যুবক।
উৎসের সন্ধানে স্বদেশ আগমন তার, কৌতূহল, জিঘাংসা মনের গহীনে তার ঘোরাফেরা করে।
সংঘবব্ধ হয় মানুষ, মুষ্টিবব্ধ হাত,
জনতার জোয়ার- মহাসমুদ্রে নেয় রূপ।
মহা জাগরণের বিপ্লবে উদ্বেলিত হয় স্বদেশ।
নতুন সে প্রভাতে সূর্য ওঠে নতুন প্রত্যয়ে।।