সবাই যে যার মতো হারিয়ে যায় জীবন থেকে;
একেক করে, একেক সময়ে।
একই সংগীত গীত হয় নানাভাবে,
তবে ভালো লাগে, একেকজনের একেক সময়ে।
পাথর্ক্য কেবল সময় আর ভালোলাগায়।
তারপর?
মানুষগুলো সব বিষণœ হয়, ক্লান্ত হয়-
কাঁচের দেওয়াল গড়ে তোলে চারপাশে,
ক্রমে তারা মানুষ থেকে ছায়ায় রূপান্তরিত হয়।
তারপর একসময়, কোন এক মধ্য দুপুরে,
সূর্য যখন মাথার উপর,
তখন আর ছায়াও থাকে না, নাই হয়ে যায় মানুষগুলো।
এক এক করে নাই হয়ে যাওয়া মানুষগুলো, কিংবা রূপান্তরিত ছায়াগুলোর
কী ভাবে মুক্তি মিলবে এই পরিশ্রান্ত ঘমাক্ত পৃথিবী থেকে?
মানুষগুলোর এখন বড্ডো আলস্য লাগছে।
চারদিকে রঙের খেলা এ পৃথিবীতে;
স্বপ্নের সব কিছুই এখানে ঘুরে ফিরে আসে;
ছায়া অথবা রূপান্তরিত মানুষগুলো হাত-পা ছড়িয়ে বসে থাকে।
সবাই যেন খোকা,
সবাই যেন বোকা।
ছায়ার এই পৃথিবীতে অথবা আলফা সেন্টুরাইয়ে,
বনের প্রতিটি বৃক্ষ যেন সহসা চঞ্চল হয়ে উঠে।
প্রতিটি পত্র, প্রতিটি ফুল ও ফল যেন অস্বাভাবিক সজীব ও অস্থির;
বৃক্ষ থেকে মুক্তি পেতে তারা ছটফট করে।
ছায়ার এই পৃথিবীতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে, কিন্তু অরণ্যে অরণ্যে ক্রমে যেন আলোর রেখা তীব্র হয়ে উঠে।
তারপর সমান্তরাল অন্য পৃথিবীতেও ছায়াদের আধিপত্য বিস্তৃত হয়।
বিলুপ্তি ঘটে নেকড়ে ও শেয়াল সভ্যতার।
অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথের কাছাকাছি অন্যকোন পৃথিবীতে
একা পুর্নজাগরণ ঘটবে সে মানুষের,
ফুল ও ফলের মিশেলে;
নীরবে থাকবে ভোগান্তি,
একাকী সেই পৃথিবীতে মতান্তরে নীল গ্রহে মানুষগুলো একাকী বসে থাকবে বড় বড় পাথরের উপরে;
আর সারাদিন ডুবতে থাকা সূর্যের নরম আলো মেখে নেবে,
আসবে অনন্ত স্থিরতা।
অনন্ত জীবনের প্রত্যাশায় মানুষগুলো একা একা ছায়া হয়ে যাবে, নাই হয়ে যাবে।
অন্যেরাও ছায়া এবং নাই হবার অপেক্ষায় থাকবে, ক্লান্ত হবে।
নীল গ্রহ মতান্তরে অন্য পৃথিবীতে সূর্য ডুবি ডুবি করে।
অগণিত বড় বড় পাথরে, অসংখ্য একা মানুষ হাঁটু মুড়ে বসে থাকে সুখের আশায় অনন্তকাল।
এখানে সূর্য ডোবে না, সূর্য ওঠে না।
ক্লান্তিকরভাবে কেবল ডুবি ডুবি করতে থাকে।।