তৃতীয় পরিচ্ছেদ
কামার জোর বাড়িতে বড়দিনের আনন্দ কোলাহল। আজ রকমারি রান্নাবান্না হয়েছে। জো’র চাচাও এসেছেন দাওয়াত খেতে। লোকটার নাম: পাম্বলসুক। মেজাজ তাঁর তিরিক্ষে। চেঁচিয়ে কথা বলেন। কথা তো বলেন না যেন তেড়ে উঠেন। খনখনে গলার আওয়াজ। মারমার স্বভাব।
খাবার টেবিলে গিয়ে বসেছে সবাই। চাচা লোকটা সেই তখন থেকে লেগেছেন পিপের পিছনে। এই বাচ্চা, খুব যে হাপুস-হুপুস চালাচ্ছিস? ঐার খাচ্ছিস, তার কথাও মনে রাখিস এক আধবার। খালি গরুর মতো গিলবি না বুঝেছিস? মনে রাখবি আমার কথাটা।’
বোনের গলাও এক পর্দা উঠে আসে। বলে. ‘ খা বাপু খেয়ে নে। তবে গুরুজনদের কথাও শুনতে হয়। অন্যদিকে ভগরিপতি জো‘র এসব দিকে নজর নেই। নিজেও যেমন খাচ্ছে, পিপকেও তেমনি দিচ্ছে। ও কিওে, খাচ্ছিস নে কেন? তোর তো রান না হলেই নয়। নে, এই নে এটা খেয়ে নে দেখি। দেখিস, পেটে জায়গা রেখে উঠে পড়বি নে যেন। পিপ মাথা নিচু করে ভগনিপতির দেওয়া খাবারে মনোনিবেশ করে।
ওদিকে বাইরে তখন মেলাই সোরগোল। অনেক লোকজনের ভীড়। কি ব্যাপার? খাবার টেবিল ছেড়ে উঠলো মিসেস জো। দরজা খুলতেই দেখা গেলো দশবারো জনের ইউনিফর্ম পরা সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী তাদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে।
ক্যাপ্টেন এগিয়ে এলো। বললো, কামারকে চাই। মিসেস জো ভয় পাবার মেয়ে নয়। বললো, কেন, কি দরকার তাকে?
ক্যাপ্টেন লোকটা লোহার একটা হ্যান্ডকাফ দেখিয়ে বললো, এটার একটা মুখ খারাপ হয়ে গেছে, লাগছে না। এখন এটাকে এখুনি ঠিক কওে দিতে হবে। জরুরি দরকার। ততক্ষণে কামার জো এসে গেছে সেখানে।
ক্যাপ্টেন তাকে কাজটা বুঝিয়ে দিতেই জো তখুনি ছুটে গেল তার কামারশালায়। মিসেস জো ক্যাপ্টেনকে এক কাপ গরম চা তৈরি করে দিলো। ক্যাপ্টেন জিজ্ঞেস করলো গোরস্তানটা এখান থেকে কতোটা দূরে? তা প্রায় এক মাইলের মতো। সামান্য এদিক-ওদিক হতে পারে। কিন্তু কেন? ওদিকে কেন? হাতে কাপ, ধূমায়িত চায়ের দিকে চোখ রেখে ক্যাপ্টেন বললো, দু‘দুজন খুনে ডাকাত পালিয়েছে গারদখানা থেকে। সাংঘাতিক স্বভাবের লোক, দুটোই রগচটা খুনে দস্যু। এদিকে কেউ দেখেছো নাকি?
মিসেস জো জবাব দেওয়ার আগেই কামার এসে পড়লো সেখানে। জিনিসটা ভালো হয়ে গেছে। পুলিশ বাহিনী তখুনি রওয়ানা হয়ে গেলো গোরস্তানের দিকে। তাদের পিছু পিছু চললো কামার জো আর বাচ্চা পিপ। কামারের মনে হলো পুলিশের লোকজনদেও সবুট মার্চের শব্দে খুনিরা আগেই ভেগে পড়বে। যাক্, তাই থাক্, পালিয়ে বাঁচুক! (চলবে)