ষষ্ঠ পর্ব
মানুষ তো মানুষেরই খবর রাখে না। পৃথিবীর আবহাওয়া ক্রমশই চরম উল্টাপাল্টা আচরণ করছে। সারা ইউরোপ জুড়ে চলছে তীব্রদাহ, দাবানল, ঝড়, বন্যা আর বৃষ্টি। আর শুধুইবা ইউরোপ কেনো, আসলে সারা পৃথিবীব্যাপী চলছে চরম আবহাওয়া যাতে করে কাকদের স্বভাব পর্যন্ত পাল্টে যাচ্ছে!
তুলতুল নামের এই কাক সম্পর্কে ভাবতে গিয়ে কাক সম্পর্কে শুনে আসা বিভিন্ন কথা নিলয়ের মনের কোণে উঁকি দেয়- অসময়ে কাকের ডাক না‘কি অশুভ কিছু বয়ে আনে। আসলেই কী তাই? কাক কি প্রকৃতির অনেক কিছু বুঝতে পারে আগে থেকেই? ঝড়-বৃষ্টি কবে হবে? মানুষের উপর কোনো বিপদ নেমে আসবে কী‘না ইত্যাদি বিষয়?
তুলতুলের কথায় নিলয় আবার তার ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে আসে।
তুলতুল আবার বলে, একটি ব্যাপার ভেবে দেখেছো, পৃথিবীর রাতগুলো ক্রমশই উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। ঘন অন্ধকার রাত আজকাল আর পাওয়া যায় না। তোমাদের (মানুষের) ঘুমের ধারাবাহিকতা পাল্টে গেছে। তোমরা রাত ১২টায় রাতের খাবার খাও। এগুলো স্বাভাবিক ব্যাপার না। তোমরা মানুষরা আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে দিচ্ছ। নিজেদেরটা তো বহু আগেরই শেষ করে দিয়েছো। আমরা তো ঢাকা শহরে রাতে শান্তিতে ঘুমাতেও পারি না। উজ্জ্বল আলো, গাড়ি, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, বাসরে হর্ণের শব্দ আমাদের অস্থির করে তোলে। গাছের ডালে বসে আমরা কেবল ঝিমাই, ঘুমাতে পারি না।
তুলতুল হঠাৎ খ্যাক খ্যাক করে হাসে।
বলে ওঠে তোমরাও তো ঘুমাতে পারো না। ঢাকা শহরের বড় বড় ফ্ল্যাটে যারা বাস করে, তারা তো বিভিন্ন ধরনের ঘুমের ওষুধ খেতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। সব সময় আবার ওষুধেও কাজ দেয় না ঠিক মতো। নিজেরাই তোমরা নিজেদের ক্ষতি করছো। বুঝতেও পারো না যে, কি করছো। (চলবে)