এখন নানা পথ নানা মত পরস্পরের বিরুদ্ধে; সুবোধ তুমি চুপচাপ থাকো। ওরা সবাই যার যার মতো সব কিছুই দখল করে নেবে তুমি শুধু চেয়ে রবে একাকী দলহীনভাবে। এখনতো সময় দলাদলির, সুবোধের দল নেই কোনো; তুমি তো কেবল বহুজনের খাবলাখাবলির শিকার। শীতের পাখিরা তবু পরিযায়ী হয়, তোমার জন্য খোলা নেই কোনো পথ, অবারিত নেই কোন পথ, আকাশ বা জলে। এখনও সন্ধ্যা নামলে তুমি পোস্টারে ভরে দাও জনতার বুকের দেয়াল; এখনও জ্যোস্না রাতে তুমি চেয়ে থাকো অগণিত নক্ষত্রের পানে এলিয়েনের বার্তার আশায়। অথবা বিলুপ্তপ্রায় কলা বাদুরের মতো ডানা ঝাপটাও তুমি; অথবা এখনও দু’চারটা বিচরণশীল মেঠো ইঁদুরের মতো অতৃপ্তিতে চেয়...
জন্মের সময় আমি কালো ছিলাম, যখন আমি মায়ের স্নেহে বেড়ে উঠলাম তখনো আমি কালো। সূর্য যখন তার অনাবিল রশ্নিতে আমাকে উষ্ণ করে তুললো তখনও আমি কালো। ভয়ে যখন আমি শংকিত তখনও আমার মুখের রং কালো। অসুস্থ, ক্লান্ত আমি, মুখশ্রী আমার তখনও কালো। এবং মৃত্যু এসে যখন আমায় আলিঙ্গন করলো তখনও কালো মানুষ আমি কালোই রয়ে গেলাম। আর সাদা মানুষ তুমি, জন্ম নিলে যথন তখন তুমি কী অপরূপ গোলাপী! তারপর মায়ের কোলে, আদরে বেড়ে উঠলে ধবধবে সাদা হয়ে। সূর্যের প্রখর তাপে তুমি লাল হয়ে উঠলে, শীতের চরম শীতলতা তোমায় করলো নীল। এক সময় ভীত সন্ত্রস্ত তুমি হয়ে গেলে পীত বর্ণের, অসুস্থ তুমি বর্ণে সবুজ, আর মৃত্যুর কোলে ...
তুমি আছো আতলান্তিকের ওপার, আমি বাংলাদেশ। কুশল সংবাদ সুধালে, বল, ‘আল্লায় রাখছে ভাই’। এই কার্তিকের মাসে, কেমন চলছে জীবন তোমাদের? সিত্রাং এর জলোচ্ছাসে ভেসে গেছে আমনের ভরা ক্ষেত। মেঠো ইঁদুরের ঘর ভেঙে চুরমার।। মাছগুলো ঘেড় ভেঙ্গে ভেসে গেছে সব। তবুও একটু হেসে জবাব দাও,‘আল্লায় রাখছে ভাই’। নেই কোনো অভিযোগ কারো কাছে, কেবলই মেনে নাও ভাগ্যে যা লেখা আছে তাই! তবুও তো যাও তুমি ভাগ্যান্বেষণে বহুদূর দিগন্তের পথে; মহাসাগরে ভেসে যাও বিশাল পালহীন নৌকায়। তারপর সাগরের বুকে হয় সলিল সমাধি। আর প্রিয় মুখগুলো মানচিত্র আঁকড়ে পড়ে থাকে।।
এখনও জোনাকি পোকারা গ্রীষ্মের কোন এক দীর্ঘ রাতে প্রকৃতিতে আলোর নির্দেশনা দেয় অন্ধকার ঘন হয়ে এলে; আধুনিকা, তিলোত্তমা শহরের ফ্লোরেসেন্ট আলোর নীচে জোনাক পোকার লুসিফারিণের আলো এখন বড্ডো বেশি বেমানান লাগে। জলবায়ু, আবহাওয়া, বিশ্বমন্দা, যতোসব তাত্ত্বিক কথা, হারানো গেছে তাই; প্রেম, প্রকৃতি, বাস্তুতন্ত্র ইত্যাদি, মৌলিক গাঁথায় বোনা হবে শীতের লেপ-কাঁথা। ড্রোন আর মিশাইলের আন্তরিক বন্ধুত্বে বিচলিত ঘাস ফড়িং, লক্ষ্মিপেচাঁ, মেঠো ইদুঁরেরা বাস্তুহীন ছুটে চলে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ পানে; শুধু পুড়ে যাওয়া ঘাস, অরণ্য অপলক চেয়ে থাকে নিশুতি রাতে অগণিত নক্ষত্রের দিকে, সেখানেও একদিন প...
একটা লক্ষ্মী পেঁচা হঠাৎ এসে দেখা দেয় কার্তিকের কুয়াসাহীন সকালে; তখন ভোরের শিশির আর গাছের পাতায় সূর্যালোকে ঝিকিমিকি করে না। পাশের গ্রামে ওয়াজে আসা হুজুরের মতে, এসকলই আলামত কেয়ামতের; যখন সব কিছু দুনিয়াতে অন্যরকম হয়ে যায়। দাবানল, খরা, অতিবৃষ্টি, মানুষের মন ও হ্নদয়ে আঁকে বেসামাল অস্থির ছবি। শিশু শ্রেণীর ছোট্ট শিশুসব রঙিন পেন্সিলে ফুল,পাখি, প্রকৃতি আঁকতে ভুলে গিয়ে আঁকতে বসে ঝড় আর জলোচ্ছাসের ছবি। তবে কি এবার থেকে নবান্ন উৎসব, পিঠাপুলি বানের জলে যাবে ভেসে? হায়! মেঠো ইঁদুরের দল সব ছুটে চলে কোন সে হ্যামিলনের পাগল করা বাঁশির সুরে। ব্যাঙ আর সাপ অস্থিত্ব রক্ষায় ভুলে যায় ...