আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ চলমান থাকবে, প্রতিটি নির্জন রাতে আমাদের স্বপ্নে শহীদরা ফিরে আসে. আমরা তাদের অনুভক করি বুকের ভেতরে। আমরা জানি তোমাদের স্মৃতি বহমান অবিরাম; দূরে অথবা কাছে যেখানেই আমরা থাকি, দূরত্ব যাই হোক; তোমাদের কথা আমাদের স্বপ্নে ভাসে। আমাদের বিশ্বাসে, আমাদের হৃদয়ে তোমাদের অবারিত স্মৃতি কথা আলপনা আকেঁ; হৃদয়ের বন্ধ দূয়ারে আঘাত হানে সব সকীর্ণতা দূর করতে। এবং আমাদের হৃদয় তোমাদের জন্য ব্যথিত হবে বারংবার। তোমাদের ভালোবাসা একটিবার আমাদের স্পর্শ করলেই, তা যেনো সারা জীবনের জন্য আমাদের দেহ-মনে জড়িয়ে যায়; এমন ভালোবাসা আমাদের মৃত্যূর পরও অবিচ্ছেদ্য রয়ে যাব...
রাত বাড়লেই চলে যাওয়া মানুষগুলো রাস্তায় নেমে আসে; দূরের বাড়িগুলোতে একটি একটি করে বাতিগুলো নিভে যায় তখন, শহরের সম্ভান্ত্র অংশে অলিগলিতে যখন নৈশ প্রহরীর হুইসেল শোনা যায়; ঠিক তখন ওরা রাস্তায় নেমে আসে; প্রজন্ম ভিন্ন হলেও, ওদের মাঝে নেই কোনো বৈষম্য এখন; ওরা সব ১৫২, ৬৯, ’৭১, ’৯০ আর ’২৪ এর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের দল। দল বেধে প্রতিরাতে ওরা আসে এই ঢাকা শহরের অলিগলিতে, তিনশ ফিট আর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে; দেখতে কি পায় তাদের এই মহানগরের রাতের জেগে থাকা জীবিত মানুষগুলো? অথবা তাদের দেখতে কি চায় এই মহানগরের মানুষগুলো? গড়তে কি চায় হৃদয়ে হৃদয়ে শহীদ মিনার?
সশব্দ বিস্ফোরণের শব্দ বারুদের গন্ধ ভাসে বাতাসে, একাকী নেকড়ে লোকালয়ে আবার আক্রমণ করে। উল্টা-পাল্টা মতবাদ মানুষকে বিভ্রান্ত করে দাবানলের মতো। হিংসা ছড়িয়ে দেয় ভঙ্গুর সমাজের রদ্ধে রদ্ধে। এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ আর আমেরিকা জুড়ে কেবলেই বারুদের গন্ধ। সর্বত্রই ঘুরে ফিরে একাকী নেকড়েরা। সভ্য মানুষগুলো বিলুপ্তপায় নেকড়ের রূপ ধরে ভাইদের হত্যায় হিংস্র দাঁত বিকাশিত করে।।
এখনো পেঁজা তুলো মেঘ ওড়ে প্রাচীন অশত্থ শাখায় নেতার হতচকিত আতœা ফিরে আসে। বাতাসে ভুলের আর্তনাদ মানচিত্র ক্ষত-বিক্ষত শুভ কথা, বাক্য বিনিময় সিক্র সিক্্র শার্প শুটারের অর্র্গান। বাতাসে আর্তনাদ- আমাকে রক্ষা কর।। আর্তনাদ শুনি’ গরীবস্য গরীবের নারীদের হাত পোড়ে মৌলবাদে কতটুকু আর্দ্রতা, উষতা পেলে স্ফীত হবে ওই হাত? লোকটা এখনো টুপিসমেত মিছিলের সামনে চলে আসে চশমার ফাঁকে দেখে প্রৌঢ়, রমণী মানচিত্রে হেলান দিয়ে বক্তৃতা শোনে। কারা যেন বলে- মানচিত্র বলয়ে লেখা হবে তোমার নাম।
হে বন্ধু, তোমার নৈকট্যে কিছুদিন স্বপ্নের সরোবরে কেটেছি সাঁতার; অকস্মাৎ কারণ ছাড়া শেষ হলো জলকেলি, যেমন শুধু সেতারের আলাপেই শেষ করেন সংগীত কোন দুঃখী শিল্পী আনমনে। জানতাম বিদায়ের প্রহর একদিন আসবেই প্রেমিক হ্রদয়ে মোর ছড়িয়ে দেবে রাশি রাশি বেদনার উত্তাল ঢেউ, কিন্তু এতোই শীঘ্র আসবে সেই ভয়ংকর বিদায় কখনো ভাবিনি আগে। তুমি অথবা আমি কেউ-ই দায়ী নই এমন সংকটে। যা ঘটেছে হয়ত তার বিষ বৃক্ষ অগোচওে আমরাই পরস্পর করেছি রোপন অসর্তকভাবে? এখন চারদিকে দৃষ্টি অন্ধকরা কালবৈশখী ঝড়, কেনো জলে লুপ্তপায় সাঁকো আর গৃহহীণ মৃত পাখি ভাসমান।।