তুমি তো জানোই না কেমন করে একটি বিকেল বুড়িয়ে যাচ্ছে বাইরে- তুমি ব্যস্ত- ডাটাবেজ, ইন্টারনেট আর ওয়েব পেজ নিয়ে। পুরোনো ম্মৃতিময় ফাইলগুলো ডকুমেন্টসহ ফেলোছো যে মুছে কিন্তু হার্ডডিস্ক, তুমি আর ভালোবাসা দিয়ে ফরমেট করোনি। ভালোবাসা ভরা কতই না ই-মেইল পাঠাই একটিবারও ওপেন করোনি, ভাইরাস সখ্যতা ছড়িয়ে পড়ার ভয়, ভালোবাসার আকুতি মিশানো ডিস্কেট পাঠাই, প্রতিবারই তোমার মনের মনিটরে লেখা হলো- ‘দ্য ডিস্ক ইজ আনরিডেবল’।
আষাঢ়ের বৃষ্টিভেজা বিকেলে তমালিকার চোখের বিষণ্মতা প্রেম, ভালোবাসা মিলে বর্ষার কবিতা হয়, তারপর . . . . শ্রাবণের মেঘ থেকে ঝরে পড়ে মহাকাব্য হয়। মহাকাব্যের সিডি তথ্যসরণী ধরে মেঘের রাজ্যে পৌঁছায়। নীপ নিকুঞ্জে বাতাসের প্রণয় ক্যাসেট। বকুলের মালা মেঘ রাজ্যে কেন অ্যাসিডের ভাইরাস ছড়ায়? কম্পিউটার জেনারেশনে মেঘ আর কালো হয়ে রঙে রঙে গর্জে উঠে বৃষ্টি ঝরায় না। এখন তপু অপেক্ষায় থাকে কম্পিউটারাইড বৃষ্টি দেখার আশায়। স্বর্গ থেকে রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে কম্পিউটারাইড বৃষ্টি আর নাহিরে।’
বন্যতায় সে মুক্ত নারী যেন এক, এক বিন্দু শিশির ঝরে পড়ার মতো তার বিচরণ, সীমান্ত অথবা সীমানার ধারণাহীন সে এবং নিয়ম ও রীতিনীতির পরোয়া করে না সে। সময়ের বিপরীতে এবং বিপক্ষে দাঁড়ানো তার জন্য কোন-ব্যাপার না। তার সেই নিষ্কলুষ প্রবাহমানতা, তার উপস্থিতির উষ্ণতা যেন বিশুদ্ধ জলের মতো; আদতেই সে কোনো পুরুষের অথবা ঘর বা কোনো শহরের বাসিন্দা নয়। মুক্ত এক নারী সে ‘বিশ্বের প্রথম নারীর’ মতন।
তাহলে তুমি আমাকে তোমার সুদৃশ্য জিনস প্যান্টের ডান পকেটে লুকিয়ে রাখতে পারো! আমাদের চার চোখের মিলন না হওয়া পর্যন্ত জড়িয়ে রেখো প্রগাঢ় ভাবে। তুমি কখনোই একাকী বোধ করো না, অপেক্ষা করো শুধু আমার ঘরে না ফেরা পর্যন্ত।
ক্রমে অস্তিরতা তীব্র হয়। ক্লান্ত পাখির দেহের পাখনা আসে বন্ধ হয়ে; ঘর্মাক্ত দেহ নুয়ে আসে; ক্রমে হয় ন্যুজ্জমান। এ কেমন হতাশাময় জীবন? ‘সুবোধ’রা অস্তিরতায় ক্ষিপ্ত হয়, পালানোর ইচ্ছা ক্রমে ম্লান হয়ে আসে। পলায়নী ইচ্ছা ভুলে ‘সুবোধ’রা প্রতিরোধ গড়ে; গ্রামে-গঞ্জে লোকালয়ে বিপ্লবের ঝলকানি রেখা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠে। ‘সুবোধ’ তুমি জেগে উঠো, নতুন দিন আগত প্রায়, তুমি গেয়ে উঠো মহিমান্বিত সেদিনকে অভিবাদন জানাতে।