জিন্দা লাশ পর্ব-৪ বেচারা আবিদ মন্ডল। তার নিজের ছেলেরা তাকে আটকে রেখেছিল মাস্তানদের দিয়ে। দু’বেলা শুধু কিছু খাবার দিয়ে যেত তারা। একদিন হঠাৎ খাবার দেয়াও বন্ধ হয়ে গেল। আবিদ মন্ডল বন্ধ দরজায় অনেক ধাক্কা দিল। ডাকডাকি করলো, কিন্তু কেউ কোন সারা দিল না। আস্তে আস্তে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় আবিদ মন্ডল অস্থির অবস্থা থেকে ক্রমে ঝিমিয়ে পড়তে লাগলো। হয়তো তিন-চার দিন এভাবেই গিয়েছে। আবিদের মনে নেই। একদিন রাত ভোরের আবছা অন্ধকারে সে দেখলো ঘরের বন্ধ দরজাটা যেন অর্ধেক খোলা। বাইরের পৃথিবীতে তখন ভোর হচ্ছে। পূবের আকাশটা বিচিত্র রঙে রঙিন হয়ে উঠছে। পৃথিবীতে কোন মানুষ কোনো দিন বন্দি হয়ে থাকতে...
জিন্দা লাশ পর্ব-৩ ওনাকে পানি দেন তাড়াতাড়ি, র্যাব কমান্ডার জামশেদ নির্দেশ দেন। পুলিশের একজন এসআই গাড়ি থেকে পানির বোতল নিয়ে দৌঁড়ে যায় ‘জিন্দা লাশ’ বলে কথিত লোকটির পানে। মানুষটির নিজে নিজে পানি খাবারও ক্ষমতা নেই। তার মাথা কাত করে বোতলের পানি পান করায় এসআই নেয়ামত মওলা। ওয়্যারলেসে খবর পেয়ে ফুলছড়ি গ্রামের নিরবতা ভেঙ্গে একটি অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছায় সেখানে। করিমন ব্যাপারীর খড়ের গাদায় পাওয়া মানুষটিকে সদার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ বা র্যাব কারো কাছে থাকা ছবির সাথেই মানুষটির কোন সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায় না। সদরের ডাক্তাররা জানান লোকটি মানসিক ভারসাম্য হারিয়...
জিন্দা লাশ পর্ব ২ দুপুর নাগাদ পুলিশের গাড়ি ফুলছড়ি গ্রামে পৌঁছাল। ওসি নূরুদ্দিন গাড়ি থেকে নামতেই চেয়ারম্যান আবেদ ভুঁইয়া আর করিমন ব্যাপারী তাকে ঘিরে ধরে। করিমনকে বলতে শোনা যায়, দারোগা স্যার আমার কোন দোষ নাই। খড়ের গাদা আমার হতে পারে, কিন্তু লাশের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। ওসি নূরুদ্দিন চটে ওঠে, দারোগা কি , এ্যা? বলেন ওসি স্যার। আপনি গত রাতে কই ছিলেন ওসি নূরুদ্দিন ব্যাপারীকে জিজ্ঞেস করে। ওসি স্যার, বিশ্বাস করেন গতরাতে আমি বাসাই ছিলাম। দরকার হলে আপনি আমার বউ, বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করেন। ওরা তো আপনার শিখানো কথাই বলবে, আপনাকে বাঁচাতে। ব্যাপারী অসহায় ভাবে তাকায় চেয়াম্য...
জিন্দা লাশ পর্ব ১ ফজরের নামাজটা শেষ করে নিজের বাড়ির দিকে ফিরছিল ফুলছড়ি গ্রামের করিম ব্যাপারী। গঞ্জে দোকান আছে তার। আয় রোজগারো ভালো। গাভী রয়েছে ৮/১০টি। ছোটখাট খামারই বলা চলে। দুধ বেচেও ভালো আয়। অনেকগুলো খড়ের গাদা করিমন ব্যাপারীর। খামারের কাছাকছি চার নম্বর খড়ের গাদার খড়গুলো চারপাশে এলোমেলোভাবে পড়ে আছে দেখে ব্যাপারীর সন্দেহ হলো নিশ্চয় রাতের বেলা কেউ খড় চুরি করতে এসেছিল! ভয়ানক ব্যাপার! দ্রুত পা চালিয়ে সে খড়ের গাদার কাছে পৌঁছলো। খড়ের গাদা ভালোভাবে পরীক্ষা করতে গিয়ে হঠাৎ তার চোখদুটি ভয়ে বিস্ফোরিত হয়ে গেলো। একী দেখছে সে? পায়ে রশি বাঁধা মানুষের পা দেখা যাচ্ছে। ভয়ে গ...
জামাল সাহেব লেখালেখি করার জন্য উপযুক্ত স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন তার ব্যালকনিকে। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি এই কাজটি করবেন বলে ভাবছিলেন। নিজের ঘরে বসে তিনি কখনওই নির্বিঘ্নে লেখালেখি করতে পারেন না। এই বিঘ্ন সৃষ্টিকারী বাড়ির প্রধান সদস্য হল তার ছয় বছর বয়সী নাতি,অনি। এই নাতিটি তার একমাত্র মেয়ে শৈলীর সন্তান। শৈলী দীর্ঘদিন যাবত অনিকে নিয়ে বাবার বাড়ি থাকছে। তার স্বামী গত দেড় বছর ধরে নিখোঁজ। দেড় বছর ধরে যে মানুষটি নিখোঁজ, তার সাথে অনেক ধরনের ঘটনাই ঘটতে পারে। কিন্তু শৈলী তা মানতে নারাজ। তার ধারণা, তার স্বামী অন্য কাউকে বিয়ে করে বিদেশ পাড়ি জমিয়েছে কিন্তু যাওয়ার আগে তাকে মুক্...