পরদিন। ‘থ্রি জলি বার্জমেন’ সরাইখানার জো আর একজন লোকের সঙ্গে দেখা হলো পিপের। পিপকে দেখে নবাগত লোকটা জোকে জিজ্ঞেস করলো, তোমার ছেলে না‘কি? না‘তো’। জো বললো। লোকটাও নাছোরবান্দা, আবার জিজ্ঞেস করলো, তবে কে হে? ভাগনে না‘কি? ‘না’। কামার জোর মুখে আবারও সংক্ষিপ্ত জবাব। হঠাৎ পিপের চোখ আটকে গেলো নবাগত আগন্তক করাতের মতো করে একটা চামচ বুলিয়ে যাচ্ছে কাঠের টেবিলের উপরটায়। তার পলক আর পড়লো না। নিষ্পলক তাকিয়ে রইলো সে। এই লোকটা তবে কি সেই পলাতক দস্যুরই কোন আত্মীয়? বন্ধুও হতে পারে। কোন বাহুল্য প্রশ্ন না করে এবার লোকটা বললো, মি. গারগেরি, আমার কাছে একটা নতুন রূপোর টাকা আছে, আপনি ...
ষষ্ট পরিচ্ছেদ তিনি তখন অন্যদিকে তাকিয়ে। পিপ তার কথা শুনছে কি শুনছে না, কোনদিকে নজর নেই। বললেন, ‘একেক সময় ভারি একলা লাগে আজকাল। কি মনে হয় জানো? মনে হয়, কেউ খেলুক আমার সামনে। কেউ ছুটোছুটি করুক আমার এখানে। কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনছো তখন থেকে? খেলতে পারো না? এতো সব জিনিষ ছড়ানো, এ নিয়ে খেলতে পারো না? পিপের মাথা ঘুরতে লাগলো। রহস্যপুরীর এই মহারানি এসব কি বলছেন? ধীরে ধীরে সে বললো, স সব নতুন লাগছে আ আমার কাছে। খে খেলবো কি কি করে? মিস হ্যামিসহাম বললেন, তোমার কাছে সব নতুন লাগছে? কিন্তু এসব আমার কাঝে কতো কতো পুরাতন! একটু ভেবে নিয়ে তাকে বললেন, বেশ, তা’হলে স্টেলাকে ডাকো স্টেলা এলো। মহারাণ...
পঞ্চম পরিচ্ছেদ গাঁয়ের সেরা ধনী মিস হ্যাভিসহাম। মস্ত বাড়ি। পাঁচিল ঘেরা। ছোট ছেলেমেয়েদের কাছে সে বাড়িটা ছিল বিস্ময়ের মত। মিস হ্যাভিসহাম অদ্ভূদ মেজাজের মানুষ। তাঁর বাতিকের শেষ ছিল না। গাঁয়ে তাকে নিয়ে অনেক প্রবাদ চালু আছে। বাইরের কারুর সঙ্গে তার মিলমিশ নেই। নিজেদের আবেষ্টনীর মধ্যেই তারা বদ্ধ থাকতো। কি তাদের রহস্য, কি তাদের গোপনীয়তা, কেউ তা জানতো না। একদিন কামার জো পিপকে নিয়ে সেই রহস্যপুরীতে গিয়ে হাজির। দুরুদুরু বুক নিয়ে পিপ এলো। সত্যি সত্যিই ভারী লোহার মস্তো গেটটা ভিতর থেকে বন্ধ। তারা সেখানে উপস্থিত হলে পিপের বয়সী একটি সুন্দরী মেয়ে একটি লোহার চাবি হাতে এলো গেট...
চতুর্থ পরিচ্ছেদ প্রথম থেকেই পিপের মুখে কোন কথা নেই। ভগিনীপতির মনের ভাব তার অনুকূল বুঝে এতোক্ষণে সে মুখ খুললো। আমরা যদি তাদের সামনে পড়ে যাই? তা কেন? আমরা তো অনেকটা পিছিয়ে আছি। ওরা ঠিক অন্যদিকে লুকিয়েছে। আমি টাকা বিলিয়ে দিতে রাজি, ওরা যদি পালাতে পারে। জো’র মুখেই থেকে গেলো কথাগুলো- আচম্বিতে সমুখের দিকে ভয়ানক চীৎকার ধ্বনী উঠলো তা যেমন হৃদয়বিদারক, তেমনি ভীতিপ্রদ! সে কিসের আর্ত হাহাকার? যেদিক থেকে চীৎকার শোনা গেলো সকলেই দৌড়ে গেলো সে-দিকে। দূর থেকে দেখা গেল, দু’জন পলাতক মরণ কামড়ে জড়াজড়ি করছে। চারদিক থেকে সশস্ত্র পুলিশ দল এগিয়ে আসছে দেখে তাদেও মধ্যে বলবান ডাকাতটা এক হা...
তৃতীয় পরিচ্ছেদ কামার জোর বাড়িতে বড়দিনের আনন্দ কোলাহল। আজ রকমারি রান্নাবান্না হয়েছে। জো’র চাচাও এসেছেন দাওয়াত খেতে। লোকটার নাম: পাম্বলসুক। মেজাজ তাঁর তিরিক্ষে। চেঁচিয়ে কথা বলেন। কথা তো বলেন না যেন তেড়ে উঠেন। খনখনে গলার আওয়াজ। মারমার স্বভাব। খাবার টেবিলে গিয়ে বসেছে সবাই। চাচা লোকটা সেই তখন থেকে লেগেছেন পিপের পিছনে। এই বাচ্চা, খুব যে হাপুস-হুপুস চালাচ্ছিস? ঐার খাচ্ছিস, তার কথাও মনে রাখিস এক আধবার। খালি গরুর মতো গিলবি না বুঝেছিস? মনে রাখবি আমার কথাটা।’ বোনের গলাও এক পর্দা উঠে আসে। বলে. ‘ খা বাপু খেয়ে নে। তবে গুরুজনদের কথাও শুনতে হয়। অন্যদিকে ভগরিপতি জো‘র এসব দিকে ...