কমরেডগণ, ভ্যান গাড়িতে পরে থাকা ঐ মেয়েটিকে আপনারা কি চেনেন? রাস্তায় পড়েছিল সেই মেয়ের সোনালী রঙের সেন্ডেল, যে বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো তারা কিনে দিয়েছিলো বুঝি। মায়ের হাতের কাজে বোনা একটি রুমাল, রাস্তায় যাত্রা পথে গরম থেকে বাঁচতে শখের কেনা হাত পাখা; গত রোজার ঈদে মায়ের কিনে দেওয়া লাল চুড়িগুলো ভেঙে পড়ে ছিল- এখানে-সেখানে। ঠোঁটের কোণে রক্ত, পরনে সালোয়ারেও চাপ চাপ রক্তের দাগ। দশ মাইলের মোড়ে হারিয়ে গেছে সে মায়ের কোল থেকে, ইয়াসমীন, কেমন যেনো স্বপ্নিল একটি নাম। কেমন যেনো ভালবাসা মাখা। কেমন যেনো মমতা ভরা নাম কিন্তুু মেয়েটা ইতিহাস হয়ে গেলো..... দশ মাইলের মোড়ে এসে হারিয়ে গেল ম...
হিজি্বিজি জীবনের কোন প্রান্তে তুমি আজ দাঁড়িয়ে হে ‘সুবোধ’? খোঁজ কর কাকে? পুরোনো কমরেড সব হারিয়েছে হিজিবিজি পথে; বাম-ডান মিলে লালনের কথকতা, বাতাসে আশাহীন বাণী প্রতিধ্বণিত করে। রাত গভীর হলে প্রজন্ম চত্বরে বিদায়ী আত্মারা সমবেত হয়, গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন রোমন্থনে। বিভক্ত মানুষেরা গভীর রাতে সংঘবদ্ধ হবার ব্যর্থ চেষ্টা করে মাত্র। বিভক্তি এখন মানুষ থেকে মানুষে; বিভক্তি বণ্য প্রাণী থেকে পাখিতে; বিভক্তি গাছে গাছে, অরণ্যের ছোট ছোট কীটপতঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। বিলুপ্তি এখন মানুষের বাস্তুতন্ত্রে; বিলুপ্তি এখন মানুষের জীবনজীবিকা আর পরিবেশে; সবকিছু হিজিবিজি হয়ে গেছে পথে যেত...
পাশাপাশি থাকা শহর ঢাকায় বস্তিবাসী, আগুন ও মাস্তান পাশাপাশি থাকে। ওখানে আগুন লাগলে অভিজাত পাড়ায় এসি চলে কেউ একা আগুন কিংবা বস্তি তাকে স্পর্শ করে না। শহরের বস্তিতে সব গরম বা শীতে প্রজ্জ্বলিত হয় বস্তিবাসী মানুষ সে আগুনে মাস্তানের সিগারেট জ্বলে। অভিজাত পাড়ায় চলে যায় এ পাড়ার ডাইল, নারী, জুয়াও তবু মাস্তান, বস্তিবাসী ও আগুন পাশাপাশি থাকে।
তুমি আর আসো না, এখন আর তুমি ঝরা পাতায় শব্দ তুলে আমার কাছে আসো না। সময় কেটে যায় ঘন্টা, মিনিট, সেকেন্ড করে। এখন আর আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে না। এই শহরে এখন প্রচন্ড খরা। নীল আকাশে কিছু আবাবিল পাখি তোমার অপেক্ষায় থাকে। বিকেলের ক্লান্ত রৌদ্দুর গাছের পাতাগুলোকে সোহাগ ভরে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায়, তবু তুমি আসো না। শহরের কোলাহল মুখর যানবাহন আর মানুষের ভিরে তোমাকে একটিবারও খুঁজে পাই না। ভার্সিটির বিকেলের ক্লাস শেষে কলা ভবনের গেট পেরিয়ে যখন রিকশা খুঁজি, চারপাশ ভালো করে দেখে নেই, কোথাও তুমি আছো কি’না। চায়ের দোকান অথবা ডাসে কোথাও তুমি নাই। টিএসসির সবুজ ঘাসের ওপর দুটো শালিক আপন মন...
শক্র মুক্ত রাজ্যে নেতা ফিরে এলো ঘরে ঘরে সাজ সাজ রব ওঠে তাই, নেতা ফিরে এলো। যুদ্ধের দিনে নেতা বন্দি ছিল শক্র রাজ্যে। তবু নেতার নামেই যুদ্ধ। ঘর ছাড়া, গ্রাম ছাড়া সবে। শরণার্থী চলে সব একাকী, দলবেঁধে অনিশ্চিতের পথে। রাজ্য হারা মানুষগুলো যুদ্ধ করে- নয় মাস ধরে বনে, জঙ্গলে, মাঠে, নদীতে, পাহাড়ে, যুদ্ধ চলে ঘরে এবং মনের গহীনে। সাধারণ মানুষ, মুক্তি সেনা, শরণার্থী- ওরা ফিরে আসে দলে দলে, গ্রামে এবং শহরে। আবার মুখরিত হয় মানুষের জীবন, পাল্টে যায় পতাকা, পাল্টে যায় মনের সব ইচ্ছা ও বাসনা। তারপর একদিন নেতাকে হত্যা করে তারা মেতে উঠে উল্লাসে। কারণ? যুদ্ধ শেষে নেতার জন্য সবার মনে আবে...