হাস্নাহেনার ঝোঁপের পাশে চুপি চুপি রাত নেমে আসে;
সীমাহীন ভাবনার জগতে ভাসতে ভাসতে আমি যেন সচকিত হই দূরগামী ট্রেনের তীক্ষ্ম সিটির শব্দে
অথবা করুণ সুরে ডাকা কোন কুকুরের আত্নচিৎকারে।
শহরের দুরগামী বাড়িগুলোতে মধ্যরাতেও জোনাক পোঁকার মতো মিটিমিটি আলো যেন জ্বলে আর নিভে।
গাছের গাছের পাতায় পাতায় মৃদু হাওয়ায় দুলছে নরম আলোর জ্যোস্না।
মধ্যরাতে জেগে খাকা মানুষগুলো নতজানু হয়
বরফের মতো
ঘাসের মতো
মোমের মতো গলতে গলতে বলে
ক্ষমা কর।
জ্যোৎস্নার মতো আমিও গলে গলে ধূসর অন্ধকার হচ্ছি।
সত্ত্বার গভীর হতে আরো গভীরে ডুবছি।
রাতের প্রহর গড়াচ্ছে;
আমি ডুবছি।
রাতের পৃথিবীতে যেন আলাদা কিছু মানুষ অন্য এক জীবনযাপন করতে আসে;
দূরের বাসাবাড়িতে বাতি জ্বালিয়ে চলাফেরা করে,
কথা বলে, ভাবে, কফি পান করে অথবা অর্থহীন লেখালেখি করে।
ঢাকার রাস্তায়, অলিগলিতে হঠাৎ যেন সব মৃত মানুষেরা, আমার বন্ধুরা এসে ডাক দেয়
“হ্যালো ম্যান যাবে না?”
‘এই তো আরেকটু থাকি ভাই’
“কথা দিলে কথা রাখতে হয়”
“তুমি তো জানো রাত ছাড়া আমরা আসতে পারি না”।
“ কষ্ট দাও কেন?”
“এখন যাও ঘুমাও”।
ঘুম তো এই শহরে আসে না।
আসবেও না কোনদিন।
যেমন আসে না জ্যোৎস্না ভরা রাতে কলা বাদুরের ঝাঁক।
অথবা যায় না শোনা আর দূরগামী শিয়ালের ডাক।
তবুও আমি অপেক্ষায় থাকি, প্রতীক্ষার প্রহর গুনি,
জেগে থাকি মেঠো ইদুঁরের মতো।
থাকবোও জেগে অনন্তকাল।।