দশম পরিচ্ছেদ পিপ শেষ পর্যন্ত জো‘র কাজে লেগেছে। শিক্ষানবিশী করছে সে- হাতে কলমে শিখছে কামারের ছোটবড় সব কাজকর্ম। গত চার বছর ধরে সে এই কাজে ব্যস্ত রয়েছে। ‘দি থ্রি জলি বার্জমেন।’ জো, পিপ- এরা দু-জন প্রায়ই যায় এই সরাইখানায়। সেদিনও তারা গেছে। সেদিন সরাইখানাতে একজন বয়োবৃদ্ধ শহুরে ভদ্রলোক এসে প্রবেশ করলেন। তিনি অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পিপকে লক্ষ্য করতে লাগলেন। তারপর সোজা হেটে গেলেন জো’র পাশে। জিজ্ঞেস করলেন তাকে, ‘আপনাদের মধ্যে একজন নিশ্চয়ই জোসেফ গারগেরি, কামার; দয়া করে বলুন দেখি, কে তিনি? জোসেফ আরও কাছে সরে এলো। বললো, আমিই জোসেফ, আপনার কি দরকার? আগন্তুক বল...
নবম পরিচ্ছেদ বেশ কয়েক বছর পরের কথা। পিপের বোন মিসেস জো‘কে কে বা কারা অতর্কিতে আক্রমণ করে মাথায় মারাতœকভাবে জখম করে পালিয়ে যায়। তার সেবা যতেœর জন্যে জো তাদের পারিবারিক বন্ধু মিস বিডিকে বাড়িতে নিয়ে আসে। মিসেস জো আর ভালোও হলো না। তার মুখে আর কথা বলার মতো শক্তিও ফিরে এলো না। সেই থেকে বিডি পরিবারের একজনর মতো থেকে গেলো কামার জো‘র বাড়িতেই। পিপের এখন যুবা বয়েস। বিডির সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে সে ভালোও বাসে। বিডি ও পিপ একদিন নদীর পারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এক সময় পিপ বললো, ‘বিডি আমার কি ইচ্ছা হচ্ছে জানো? যেমন করে হোক আমাকে ্ভদ্রলোক হতে হবে। বিডি চমকে উঠলো তার কথা শুনে। বললো, কি...
দিন গড়িয়ে যাচ্ছে একের পর এক। পিপ মাঝে মাঝে সেই রহস্যপুরীতে যায়, আসে। আজও সে গেলো। স্টেলা সিঁড়িতে পথ দেখতে তাকে নিয়ে চললো উপরে- দোতালায়। আগে আগে যাচ্ছে পিপ, সামান্য পিছে পড়েছে স্টেলা। শান্ত ধীরকণ্ঠে স্টেলা জিজ্ঞেসে করলো, আমি কি খুব খিটখিটে? কে বললো তুমি খিটখিটে? এখনতো তুমি মেলাই ভালো মেয়ে হয়েছো! বললো পিপ, সহজ স্বস্তিপূর্ণ তার গলার স্বর। কিন্তু স্টেলা মুহূর্তে বিগরে গেলো। কথা নেই বার্তা নেই, অতর্কিতে হাত তুলেই পিপের মুখে চাপড় বসিয়ে দিলো। তবে রে ক্ষুদে শয়তান! এখন? এখন কি ভাবছিস তুই আমাকে? শক্ত কণ্ঠে বললো পিপ বলবো না, কখখনো বলবো না। তার চোখ ছলছল করে উঠলো, কাঁদ না। কাঁ...
পরদিন। ‘থ্রি জলি বার্জমেন’ সরাইখানার জো আর একজন লোকের সঙ্গে দেখা হলো পিপের। পিপকে দেখে নবাগত লোকটা জোকে জিজ্ঞেস করলো, তোমার ছেলে না‘কি? না‘তো’। জো বললো। লোকটাও নাছোরবান্দা, আবার জিজ্ঞেস করলো, তবে কে হে? ভাগনে না‘কি? ‘না’। কামার জোর মুখে আবারও সংক্ষিপ্ত জবাব। হঠাৎ পিপের চোখ আটকে গেলো নবাগত আগন্তক করাতের মতো করে একটা চামচ বুলিয়ে যাচ্ছে কাঠের টেবিলের উপরটায়। তার পলক আর পড়লো না। নিষ্পলক তাকিয়ে রইলো সে। এই লোকটা তবে কি সেই পলাতক দস্যুরই কোন আত্মীয়? বন্ধুও হতে পারে। কোন বাহুল্য প্রশ্ন না করে এবার লোকটা বললো, মি. গারগেরি, আমার কাছে একটা নতুন রূপোর টাকা আছে, আপনি ...
ষষ্ট পরিচ্ছেদ তিনি তখন অন্যদিকে তাকিয়ে। পিপ তার কথা শুনছে কি শুনছে না, কোনদিকে নজর নেই। বললেন, ‘একেক সময় ভারি একলা লাগে আজকাল। কি মনে হয় জানো? মনে হয়, কেউ খেলুক আমার সামনে। কেউ ছুটোছুটি করুক আমার এখানে। কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনছো তখন থেকে? খেলতে পারো না? এতো সব জিনিষ ছড়ানো, এ নিয়ে খেলতে পারো না? পিপের মাথা ঘুরতে লাগলো। রহস্যপুরীর এই মহারানি এসব কি বলছেন? ধীরে ধীরে সে বললো, স সব নতুন লাগছে আ আমার কাছে। খে খেলবো কি কি করে? মিস হ্যামিসহাম বললেন, তোমার কাছে সব নতুন লাগছে? কিন্তু এসব আমার কাঝে কতো কতো পুরাতন! একটু ভেবে নিয়ে তাকে বললেন, বেশ, তা’হলে স্টেলাকে ডাকো স্টেলা এলো। মহারাণ...