দশম পরিচ্ছেদ শরণখোলা থেকে কটকার দূরত্ব প্রায় ৬৫ কিলোমিটার। বন বিভাগের রেস্ট হাউস আছে এখানেও। রেস্ট হাউজের মাইল দুয়েক সামনেই ঘন অরণ্য। রাতে এখানে বাঘের ডাকও শোনা যায়। সকাল থেকেই সেদিন ঝিরঝিরিয়ে বৃষ্টি। এক আকাশ মেঘ থেকে ঝরেই চলেছে। এরকম বৃষ্টির মধ্যে বাইরে বেরোতে মোটেই ইচ্ছা হচ্ছিল না প্রফেসর রব্বানীর। বিছানায় শুয়ে কাটালেন সারাটা দিন। এখন বিকেল হয়ে গেছে। জানালার বাইরে মরা আলো। বাঘটার কথা ভাবছিলেন প্রফেসর রব্বানী। বাঘ সাধারণত লোকালয়ে এসে মানুষ আক্রমণ করে আহত বা বৃদ্ধ হয়ে পড়লে। এ বাঘটির মানুষ খেকো হবার কারণ কী তা জানা দরকার। আর সংরক্ষিত বনের বাঘের মানুষখেকো হব...
নবম পরিচ্ছেদ এখন শীতকাল। নভেম্বর শেষ হয়ে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ চলছে। সকাল বেলায় এদিকে বেশ কুয়াশা পড়ে। প্রফেসর রব্বানী ধূমায়িত চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বন বিভাগের বাংলোর বারান্দায় দাঁড়িয়ে। ঘন কুয়াসায় চারপাশে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। রশিদ গাইনের আজ আশার কথা ছিল হিরণ পয়েন্ট থেকে। সেখানে বিনা অনুমতিতে কারা যেন হরিণ শিকার করেছে। বিস্তারিত অনুসন্ধানে রশিদকে দু’জন ফরেস্ট নিরাপত্তা গার্ডসহ পাঠনো হয়েছে। খবরটা শুনে প্রফেসর রব্বানীও ভাবছিলেন স্পট অনুসন্ধানে যাবেন কি’না। কারণ হিরণ পয়েন্টে নদীর চওে কুমির আর হাঙ্গও আজকাল বেশ স্বচ্ছন্দে বিচরণ করে বেড়ায়। বঙ্গোপসাগরের উপ...
দ্বিতীয় পর্ব নিলয় ভাবে সেকি পাগল হয়ে যাচ্ছ? পৃথিবী জুড়ে করোনার আস্ফালনই এজন্য দায়ী। মানুষের চিন্তা শক্তি নষ্ট করে দেয়। নিলয়ের মনে হয় তার ছেলেবেলার কথা। গ্রামে কেটেছে তার শৈশর আর কৈশোর। গ্রামে থাকতে সে শীত-গ্রীষ্ম পাখির বাসা দেখে বেড়াতো। কত রকম পাখি। ডাহুক, বক, শালকি, ফিঙে, মাছরাঙা আরো কত! কাকের বাসায় নানান জিনিষ পাওয়া যেতো। তাই মাঝে মাঝেই কাকের বাসায় হানা দিতে ভালাে লাগতো নিলেয়ের। বিভিন্নি ধরনের চামচ, সাবান, এমনকি মাঝে মাঝে টাকাও পাওয়া যেতো। সে ভারী মজার ব্যাপার ছিল। কত রকম পাখি আছে যাঁরা কথা বলতে পারে, তবে তা শেখানো বুলি। কিন্তু কাকা তো সেসব পাখির পর্যায়ে পড়ে না। ...
প্রথম পর্ব প্রতি দিনই আসে কাকটি। পাশের বাড়ির ৫ তলার ফ্লাটটি আছে বহুদিন। ফ্লাটটির বারান্দার গ্রিলে কাকটি বসে এসে।মাঝে মাঝে কা কা করে ডাকে। নিলয় কাকটিকে তাড়া দেয়। কিন্তু সহজে উড়ে যায় না সে। বরং চুপচাপ বসে থাকে। বেশ কিছু দিন এভাবেই চলে যায়। আশ্চর্য ঘটনাটি ঘটে দিন পনেরো পড়ে। তারিখটা নভেম্বরের ১৭। নিলয় তারিখটা মনে রেখেছে। বারান্দায় বসে লেপটপে কাজ করছিল নিলয়। সামনে কফির কাপ আর প্লেটে সেন্ডুইচের আধ খাওয়া অংশ। ঠিক সে সময়ই ঘটনাটি ঘটে। কাকটি স্পষ্ট বাংলায় বলে উঠে, সেন্ডুইচের আধ খাওয়া অংশটি আমাকে ছুঁড়ে দাও তো’। চমকে নিলয় এদিকসেদিক তাকায় কিন্তু কাউকে দেখতে পায় না। সামন...
অষ্টম পরিচ্ছেদ বাংলাদেশের অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট প্রফেসর রব্বানীর মনটা কিছুদিন থেকেই ভারভার লাগছিলো। চিন্তা করলেন চলে যাবেন সুন্দরবনের দিকে। চকরিয়া সুন্দরবনে বনবিভাগের বাংলোতে রুম বুক করে জিনিসপত্র গোছাতে থাকেন প্রফেসর রব্বানী। একলা মানুষ তিনি। নিজের গবেষণা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা নিয়েই রব্বানী সাহেব ব্যস্ত। তবে কিছুদিন থেকে কম্পিউটাওে কাজ করতে করতে সব কিছু বড্ডো একঘেয়ে লাগছিল। হিউম্যান বিহেভিয়ার কনসালটিং কম্পিউটার সফটওয়্যার তাকে সুন্দরবন এলাকায় ছুটি কাটাতে পরামর্শ দেওয়াতেই এই সুন্দরবনমুখী যাত্রা তার। সুন্দরবন নিজেই চির সুন্দরী। এর রূপের কোন...